সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৩ উইকেটে হার দেখেছে বাংলাদেশ। ১৭৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করে চতুর্থ দিনেই জয় তুলে নেয় ক্রেইগ আরভিনের নেতৃত্বাধীন রোডেশিয়ানরা।
ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে আলো ছড়িয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ, যার এক ইনিংসে ৬ উইকেটসহ ম্যাচে মোট ১০ উইকেট শিকারও পরাজয় ঠেকাতে পারেনি। স্বাগতিকদের প্রথম ইনিংসে করা ১৯১ রানের জবাবে সফরকারীরা তোলে ২৭৩ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ ব্যাট করতে নেমে মুজারাবানির বিধ্বংসী বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতে পারেনি— ৬ উইকেট তুলে নেন তিনি, বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ২৫৫ রানে।
এই ম্যাচের আগে সিলেটে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেছিলেন, “আমি অধিনায়ক হিসেবে শুরু থেকেই যেটা ভাবি, প্রত্যেকটা ম্যাচ জেতার জন্য খেলব। সেইফ ক্রিকেট খেলার কোনো ইচ্ছা আমাদের কারও নেই। আমরা নতুন কিছু চেষ্টা করতে চাই এবং সেই চেষ্টা শুরু হবে আগামীকাল থেকেই।”
তবে মাঠের পারফরম্যান্সে সেই ‘নতুন কিছু’ যে জয় নয়, বরং হারের নতুন উপলক্ষ— তা আজ স্পষ্ট। ম্যাচ জেতা তো দূরের কথা, নিজেদের ঘরের মাঠেই দুর্বল প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মুখ থুবড়ে পড়তে হয়েছে টাইগারদের।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের পরিচিত প্রবাদের মতোই— বিপদের সময় ডাক পড়ে জিম্বাবুয়ের। অতীতে বহুবার এমনটা ঘটেছে— ব্যর্থতায় জর্জরিত বাংলাদেশকে সাময়িক স্বস্তি দিয়েছে এই আফ্রিকান দল। তাই তাদের অনেকেই আখ্যা দেন ‘বিপদের বন্ধু’ হিসেবে। কিন্তু এবার সেই বন্ধুই দেখাল চরম প্রতিদান— চেপে বসল বুকে, কাড়ল সম্ভ্রম।
ম্যাচ ঘিরে সমর্থকদের প্রত্যাশা ছিল ভিন্ন। চার বছর পর টেস্টে মুখোমুখি হওয়া এই দুই দলের লড়াইয়ে আশাবাদী ছিল ক্রিকেটমহল। কিন্তু ভরাডুবি এড়াতে পারল না শান্তর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ।
২০১৯ সালের আফগানিস্তান টেস্টে চট্টগ্রামে বড় ব্যবধানে হারের স্মৃতি এখনও দগদগে। অনেকেই সে সময় বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেছিলেন, যা শেষ পর্যন্ত এসে কাজেও দেয়নি। এবারও সিলেটে মাঝেমধ্যে বৃষ্টির হানা, কিন্তু তা হার ঠেকাতে পারেনি।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এই ম্যাচের পর দুই দলের মধ্যে ১৯টি টেস্টে জয়-পরাজয়ের পাল্লা সমান হয়ে দাঁড়িয়েছে— দুদলই জিতেছে ৮টি করে ম্যাচ, বাকি তিনটি ড্র। বাংলাদেশের মাটিতে খেলা ১১ টেস্টে স্বাগতিকরা জিতেছে ৬টিতে, হার ৩টিতে।
সিরিজের শেষ টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে ২৮ এপ্রিল, চট্টগ্রামে। সেখানে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর মন্ত্রই হয়তো শোনাবেন অধিনায়ক শান্ত। তবে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে— শুধু কথায় নতুনত্ব, না কি পারফরম্যান্সেও? সমর্থকরা আপাতত অপেক্ষায়— শান্ত এবার আর কী 'নতুন কিছু' শোনান!